জ্বালানির দাম বাড়ানোর একক অধিকার বিইআরসি’র হাতে: ড. শামসুল আলম

ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: দেশে জ্বালানির দাম বাড়ানোর একক অধিকার বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) হাতে। বিইআরসি ছাড়া অন্য কারো হাতে রাষ্ট্র এ ক্ষমতা দেয়নি বলে উল্লেখ করেছেন কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও জ্বালানি উপদেষ্টা প্রফেসর ড. এম শামসুল আলম।

রোববার (১৪ আগস্ট) রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশের আয়োজনে ‘বঙ্গবন্ধুর জ্বালানি দর্শন ও বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা; অস্থির বিশ্ব বাজার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

 জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর অধিকার বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) নেই উল্লেখ করে ক্যাবের উপদেষ্টা ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ শামসুল আলম বলেন,  জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি বিইআরসির (বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন) মাধ্যমে নির্ধারণ করা হবে। বিপিসির যা কিছুই ঘাটতি থাক না কেন, সে (বিপিসি) বলতে পারে, তবে সেটা নিশ্চিত নয় এবং সেটা নিশ্চিতের একক এখতিয়ার রাষ্ট্র শুধু মাত্র বিইআরসিকে দিয়েছে।

তিনি আরো বলেন,  বিইআরসি গণশুনানির মাধ্যমে আমাদের (ভোক্তাদের) সম্মতিতে সেটার দাম নির্ধারণ করবে। এখানে তেলের দাম বাড়ানোর দরকার যদি হয় তাহলে বাড়বে। আবার আমরা (ভোক্তারা) না পারলে সেটা ভর্তুকি  দিয়ে পাশে দাড়াবো। এভাবেই চলছে এবং চলবে।

দেশে গ্যাসের দাম বিইআরসির গণশুনানির মাধ্যমে নির্ধারণ করা হলেও তেলের দাম সরকার নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে নির্ধারণ করে থাকে- যা অগণতান্ত্রিক ও আইন বিরোধী বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক বদরুল ইমাম বলেন, দেশে এখনো অনেক গ্যাস ক্ষেত্র রয়েছে, যা খুজে পেলে দেশের জ্বালানি সংকট মোকাবেলা করা সম্ভব হবে। কিন্তু এই সংকটে জ্বালানিতে আমরা যোগান দিতে পারলাম না। এটাতো আমাদের নিজস্ব অবহেলা। এই অবহেলা ১ বছর, দশ বছর বা ২০ বছরে সৃষ্টি হয় নাই। এই অবহেলা সরকার হিস্টরিকালভাবেই করে আসছে।

এবিষয়ে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশনের চেয়ারম্যান নাজমুল হোসেন বলেন, বর্তমানে যে পরিমাণ কয়লা আছে তা দিয়ে বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে আরও ৬ বছর বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে। আমরা ২০২১-২২ অর্থ বছরের প্রথম দিকে যে এলএনজি ১২.২৫ ডলারে কিনেছি, তা এখন প্রায় ৪৯ ডলারে দাঁড়িয়েছে। ফলে যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে, দেশের গ্যাসের মাধ্যমে সেই সংকট মোকাবেলা করে আমদানি নির্ভরতা কমিয়েছি। তবে ডলারের দাম কমলে আবারও এলএনজি আমদানি করা হবে।  

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, এক দুইটা মাস আপনারা ধর্য্য ধরুন। আমরা আশাবাদী আগামী মাসের মধ্যে লোডশেডিং’র এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে পারবো। আমার মনে হয় বিশ্ব পরিস্থিতি খারাপ না হলে এর থেকে ভালো কিছু আমরা করতে পারবো।

অনুষ্ঠানে সংগঠনটির সভাপতি মোঃ শামীম জাহাঙ্গীরের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক রিশান নসুরুল্লাহর সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এনার্জি এন্ড পাওয়ার- এর সম্পাদক মোল্লা আমজাদ।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব (জ্বালানি বিভাগ) মোঃ মাহবুব হোসেন, বিএসটিআই’র কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা।